৯ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, সন্ধ্যা ৭:১০

ত্যাগী, নবীন-প্রবীণ নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের দাবী

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, দীর্ঘ সময় দল ক্ষমতার বাইরে থাকায় অনেকেই পুলিশি হামলা-মামলা, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। অনেকে আবার সরকারী দলের সাথে আতাত করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই পরীক্ষিত, ত্যাগী, নবীন-প্রবীণ নেতাদের সমন্বয়ে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির এসব নেতাকর্মীরা। 

এসব নেতাকর্মীরা মনে করেন, ১২ বছর যাবৎ দল ক্ষমতায় নেই তারপরও সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে দলের অনেক নবীন-প্রবীণ নেতা-কর্মী ও সমর্থক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেকেই হামলা-মামলার কারণে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। সব জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ত্যাগী ও পরীক্ষিতরা ঠিকই আন্দোলন করেছেন, রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বর্তমানে জেলা বিএনপির কোনো কমিটি নেই, কিছুদিন পূর্বে সে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাই আমরা আশা করছি, দলের মধ্যে থাকা পরীক্ষিত, ত্যাগী, নবীন-প্রবীণ নেতাদের নিয়ে শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করা হবে। যে কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কর্মকান্ডকে আরও গতিশীল করবে এবং যে কোনো আন্দোলনে রাজপথে থাকবে। 

বর্তমান সময়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের এসব নেতাকর্মীরা বলেন, বর্তমানে রাজনীতি করাটা বেশ কঠিন হয়ে গেছে। একদিকে ক্ষমতাসীনদের নানা ভয়ভীতি অন্যদিকে প্রশাসনের বাধার মুখে থাকতে হচ্ছে। যারা বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না তাদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার আহবান জানান তারা।

এবারের জেলা বিএনপির কমিটিতে পরীক্ষিত নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠিত হবে এমন প্রত্যাশা করছেন দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারাও। ক্লিন ইমেজের নেতাকর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি করছেন তারাও। কেন্দ্রও তৃণমূল এবং বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের সাথে একমত পোষণ করে এবারের কমিটিকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে ত্যাগীদের সম্পর্কে খোজ-খবর নিচ্ছে বলে জানা যায়। তৃণমূল নেতৃত্বকে ধারণ করে সৎ, পরিচ্ছন্ন, পরীক্ষিত ত্যাগী এবং দল ও দেশের জন্য ঝুঁকি নিতে পারবেন এমন পরীক্ষিত তরুন নেতারা জেলা বিএনপির নেতৃত্ব আসতে যাচ্ছেন বলেও জানা যায়। তাই নতুন মুখ আসতে পারে জেলা বিএনপির এই কমিটিতে।

জানা যায়, জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসতে চান নবীন-প্রবীনদের অনেকেই। এ তালিকায় সভাপতির দৌড়ে যাদের নাম বেশী আলোচিত হচ্ছেন তারা হলেন তৈমুর আলম খন্দকার, সাবেক সাংসদ আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, কাজী মনিরুজ্জামান মনির। সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক মামুন মাহমুদসহ সোনারগায়ের আজহারুল ইসলামের নামও উচ্চারিত হচ্ছে বেশ জোরে শোরে। এছাড়াও জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বেশ কয়েকজন তরুণ নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম জেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম টিটু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি ও বিলুপ্ত জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আনোয়ার সাদাত সায়েম, যুবদল নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, বিলুপ্ত জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রিয়াদ মোঃ চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ মশিউর রহমান রনি। এছাড়াও আরো প্রায় ডজন খানেক তরুণ ও পরীক্ষিত নেতাদের নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।


কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতা বলেন, শীঘ্রই জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হবে। নতুন কমিটি মানেই নেতৃত্বের কিছু পরিবর্তন আসবে, নতুন মুখ আসবে। পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এবার কমিটি সাজানো হবে বলে জানান তিনি। সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে যেটা বুঝেছি- ক্লিন ইমেজ, উজ্জ্বল ভাবমূর্তি যার রয়েছে এবং যারা দলের এ কঠিন মুহুর্তে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছে, করছে এবং আগামীতেও করবে তারাই কমিটিতে স্থান পাবেন এবং ভালো পদে যাবেন। গুরুত্বপূর্ণ পদেও যাবেন। যাদের ক্লিন ইমেজ আছে, পারফরমেন্স ভালো তাদের অবশ্যই আপগ্রেডেশন হবেই।’তিনি বলেন, ‘দলের এ দুঃসময়ে যারা বিএনপির সংগ্রাম-আন্দোলনে মাঠে থাকে সেসব লোকেরাই আসবে, এদের মধ্যে নতুন মুখও আসবে। যারা বয়সে অপেক্ষাকৃত কম, কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসেনি বা একেবারেই কোন পদেই আসেনি এমন অনেকেই আসতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে।’

সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা। কঠিন এই সময়ে জেলা বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে তৎপর ও গতিশীল করতে ফের তোড়জোড় শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ তোড়জোড়ে জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের দাবিদার হিসেবে আলোচনায় আসছে অনেকের নাম। 

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.